নিজস্ব সংবাদদাতা: বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই লাগাতার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ আসছিল তৃনমূল কংগ্রেসের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু শনিবার রাতের ঘটনায় চমকে উঠেছে সারা বাংলাই। এক বিজেপি নেতার আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল দুই তৃনমূল নেতার বিরুদ্ধে। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। সোমবার সকালে এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাগনান এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে অভিযোগ পাওয়ার রবিবার রাতে এই ঘটনায় অভিযুক্ত দুই তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। তার মধ্যে একজন তৃনমূলের অঞ্চল সভাপতি এবং অপরজন এলাকার তৃনমূল যুব সভাপতি।
জানা গিয়েছে, আমতা বিধানসভা কেন্দ্রের বাগনানের বাসিন্দা ওই নির্যাতিতা মহিলা সম্প্রতি আংশিক পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন। শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্য তিনি এখনও কথা বলতে পারেন না। খুব সামান্য চলা ফেরা করতে পারেন। তাঁর স্বামী বিশেষ কাজে শনিবার রাতে কলকাতায় গিয়েছিলেন। বাড়িতে রাতে একাই ছিলেন মহিলা। সেই সুযোগে এলাকার তৃনমূলের অঞ্চল সভাপতি কুতুবুদ্দিন মল্লিক ও যুব সভাপতি দেবাশীষ রানা সহ অন্ততঃ পাঁচজন তাঁদের বাড়িতে আসে বলে অভিযোগ।
খুব ধীরে দরজায় টোকা দিয়ে নির্যাতিতার ডাক নাম ধরে ডাকেন তারা। স্বামী ফিরেছে ভেবে দরজা খুলতেই নির্যাতিতা মহিলার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন অভিযুক্তরা। হাত বেঁধে ফেলা হয় তাঁর। তারপরই চলে পাশবিক নির্যাতন। তাঁকে গণঘর্ষণ করার পর তাঁর পা’দুটিও বেঁধে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। রবিবার ভোরে BJP কর্মীর ছেলে ঘুম থেকে উঠে দেখেন মা হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। দ্রুত বাবাকে ফোন করে সমস্ত ঘটনা জানায় সে। প্রতিবেশীদের সাহায্যে মহিলাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত এলাকার তৃনমূলের অঞ্চল সভাপতি কুতুব উদ্দিন মল্লিক ও যুব সভাপতি দেবাশীষ রানাকে গ্রেপ্তার করেছে। নির্যাতিতা মহিলার স্বামীর অভিযোগ তিনি BJP-র সক্রীয় কর্মী। তাঁদের বুথ থেকে গত বিধানসভা নির্বাচনে BJP অনেকটাই বেশি ভোট পেয়েছে। তাই আক্রোশের কারণে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে খবর। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাগনানে। মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। ওই দুই নেতা ছাড়াও বাকিদের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।